জলজ শৈবালের ও স্থলজ শৈবাল এর বাসস্থান বর্ণনা কর ৷

শৈবালকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা- স্বাদুপানির শৈবাল; ব্রাকিশ পানির শৈবাল; লোনা বা সামুদ্রিক পানির শৈবাল ।
Admin

জলজ শৈবালের বাসস্থান বর্ণনা কর ৷

যে সমস্ত শৈবাল জলজ পরিবেশে জন্মে ও বসবাস করে সে সমস্ত শৈবালকে জলজ শৈবাল বলা হয়। ৩০,০০০ শৈবাল প্রজাতির মধ্যে অধিকাংশই জলে অবস্থান করে। জলজ শৈবালকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয় । যথা-

  • স্বাদুপানির শৈবাল; 
  • ব্রাকিশ পানির শৈবাল; 
  • লোনা বা সামুদ্রিক পানির শৈবাল ।

১. স্বাদু পানির শৈবাল : সাধারণত যে পানিতে লবণের পরিমাণ 10ppm এর কম থাকে সে পানিকে স্বাদুপানি বলা হয়। এই পানিতে যেসব শৈবাল জন্মে তাদেরকে স্বাদুপানির শৈবাল বলে। 

যেমন- Chara, Spirogyra, Nostoc ইত্যাদি ।

২. ব্রাকিশ পানির শৈবাল : যে পানিতে লবণের পরিমাণ স্বাদু পানি অপেক্ষা বেশি কিন্তু সমুদ্রের পানি অপেক্ষা কম তাকে ব্রাকিশ পানির শৈবাল বলে। এ পানিতে যে সমস্ত শৈবাল জন্মে তাদের ব্রাকিশ পানির শৈবাল বলে। 

যেমন- নদীর মোহনা, তীরবর্তী অঞ্চলে জন্মানো Anabaena, Chlamydomonas, Oscillatoria ইত্যাদি ব্রাকিশ পানির শৈবাল ।

৩. লোনা বা সামুদ্রিক পানির শৈবাল : যে পানিতে লবণের পরিমাণ 30-45ppm তাদের সমুদ্রের পানি বলে। সমুদ্রের পানিতে যে সমস্ত শৈবাল জন্মে তাদের লোনা বা সামুদ্রিক পানির শেবাল বলে। লোনা বা সামুদ্রিক শৈবালের অধিকাংশই ফাইটোপ্ল্যাংক্টন। 

যেমন- Fucus, Sargassum, Laminaria, ulva ইত্যাদি লোনা বা সামুদ্রিক শৈবাল ।

পানির তাপমাত্রা ও বসবাসের উপর ভিত্তি করে জলজ শৈবাল চার ধরনের হয়। 

(ক) বেনথোফাইটিক শৈবাল : যেসব শৈবাল পানির তলদেশে বা কোনো অবলম্বনের গায়ে জন্মায়, তাদের বেনথোফাইটিক শৈবাল বলে। যেমন- Laminaria, Chara 

(খ) থার্মোফাইটিক শৈবাল : যে সমস্ত শৈবাল ৭০-৮০° সে তাপমাত্রায় পানিতে বসবাস করে বা জন্মায় থার্মোফাইটিক শৈবাল বলে । যেমন- Chroococcus 

(গ) ইপ্যাকটিফাইটিক শৈবাল : যে সমস্ত শৈবাল পুকুর, হ্রদ বা যেকোনো জলাশয়ের কিনারায় বসবাস করে, তাদের ইপ্যাকটিফাইটিক শৈবাল বলে । যেমন— Oedogonium, Gloeotrichia 

(ঘ) প্ল্যাংকটোফাইটিক শৈবাল : যে সমস্ত শৈবাল সাধারণত পানির উপরিভাগে ভাসমান অবস্থান থাকে তাদের প্ল্যাংকটোফাইটিক শৈবাল বলে । যেমন— Volvox, Euglena 

স্থলজ শৈবাল সম্পর্কে আলোচনা কর । অথবা, Terrestrial algae সম্পর্কে লিখ ।

যে সকল শৈবাল সাধারণত মাটিতে বসবাস করে তাকে স্থলজ শৈবাল বলে। এদের সাধারণত ২ ভাগে ভাগ করা হয়। 

যথা- ১. Saprophytic ও ২. Cryptophytic 

  •  Saprophytic : যে সমস্ত শৈবাল মাটির উপরিভাগে বসবাস, করে তাদের Saprophytic শৈবাল বলে । যেমন- Botrydium ।
  •  Cryptophytic : যে সমস্ত শৈবাল মাটির উপরিভাগে বসবাস করে তাদের Cryptophytic শৈবাল বলে। যেমন- Anabaena।

বিজ্ঞানী Friedman (1967) Cryptophytic শৈবালকে পাঁচ ভাগে ভাগ করেন । যথা-

(ক) Endodaphic algae : এসব শৈবাল মরুজ মাটির অভ্যন্তরে অবস্থান করে ।

(খ) Epidaphic algae : এরা মরুভূমির মাটির উপরিস্থলে বসবাস করে।

(গ) Hypolithic algae : এরা মরুজ মাটির পাথরের নিচের স্তরে বসবাস করে।

(ঘ) Endolithic algae : এরা মরুভূমির পাথরের ছিদ্রে বা কোঠরে বসবাস করে।

(ঙ) Chasmolithic algae : এসব শৈবাল শুষ্ক ভূমিতে পাথরের ফাটলের মধ্যে বা ভাঙ্গা অংশে বসবাস করে।

إرسال تعليق